অনেক বছর ধরে, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের মূল লক্ষ্যই হল দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং নিরাময়। হয়তো, সারা বিশ্বে যে যে ক্ষেত্রগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার সবথেকে বেশি হয়, তার মধ্যে মেডিকেল ফিল্ডে টেকনোলজির ব্যবহার মাত্রাতিরিক্তভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এর ফলে, বহু মানুষ নিজেদের জীবন ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছেন।
২.তথ্য প্রযুক্তি যোগদান:-
তথ্য প্রযুক্তির যোগদানে, এই চিকিৎসা ক্ষেত্রে সবথেকে বড় সুবিধা হয়েছে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে। সারা পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন এবং তাদের সমস্ত তথ্য ইন্টারনেট মাধ্যম এবং সার্ভার দ্বারা জমা হয়ে থাকছে অনলাইন মাধ্যমে।
এর ফলে, স্বাস্থ্যকর্মীরা খুব সহজেই রুগীদের তথ্য সারাজীবনের জন্যে জমা করতে পারছেন।
এছাড়াও, তারা খুব সহজেই তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেইসব রুগীদের রেকর্ড ব্যবহার এবং সম্পাদন (correction) করতে পারছেন।
এই প্রযুক্তির সবথেকে বড় অবদান হল, এই অনলাইন ডাটা সার্ভিসের জন্যে রুগীদের ভুল চিকিৎসার সম্ভাবনাও অনেক কমে গেছে। আর, এই প্রযুক্তিগত পরিষেবায় পেশেন্টদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩. ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড:-
ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড-এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীরা খুব সহজেই প্রত্যেকটি রুগীর ওষুধ এবং সেবার (treatment) সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য পেয়ে যান।
এইসব রেকর্ডে রুগীদের মেডিকেল হিস্ট্রি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকায়, রোগ নির্ধারণ করে চিকিৎসা করা ডাক্তারদের কাছে অনেক সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।
৪.বৈদ্যুতিন স্বাস্থ্য রেকর্ডের লাভ :-
এই ইলেট্রনিক হেলথ রেকর্ড বা বৈদ্যুতিন স্বাস্থ্য রেকর্ডের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে উঠেছে পরিপাটি এবং সম্পূর্ণরূপে অভ্রান্ত। আগে, পেশেন্টদের তথ্য লেখা হতো কাগজে-কলমে। আর ডিজিটাল মাধ্যম এবং তথ্য প্রযুক্তির অকল্পনীয় উন্নতির ফলে বাদ পড়েছে পুরোনো কাগজের নথি লেখার ব্যবস্থা।এই সমস্ত কাগজের নথিগুলো ছিল ব্যয়সাপেক্ষ, এবং এর হিসেব রাখা এবং গুছিয়ে রাখাও ছিল যথেষ্ট কঠিন কাজ।তাই, প্রযুক্তির সাথে মেডিকেল জগতের মেলবন্ধনে এই সমস্ত রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়ে উঠেছে অনেক বেশি সহজ।
৫. রোগীর তথ্য রেকর্ডে থেকে যায়:-
এই ডাটাবেস গুলোতে রোগীর এলার্জি, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ও নানা খুঁটিনাটি তথ্য রেকর্ডে থেকে যায়।
যেকোনো মেডিকেল সংস্থা থেকে যেকোনো ডাক্তার তার রোগীর মেডিকেল হিস্ট্রির খবর পেয়ে থাকেন।
এর ফলে, খুব জটিল অসুখের রোগীর শুশ্রুষায় এই ডাটাবেসগুলোর তথ্য খুবই কাজে লাগে স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মীদের।
৬. EHR বা electronic health records:-
EHR বা electronic health records-এর ফলে যারা ক্লিনিকাল গবেষকরা রয়েছেন, তারা এইসব ডাটাবেস থেকে তথ্য গ্রহণ করে কোনো রোগ বা মহামারীর চিকিৎসা বা টিকার খোঁজ করেন।
খুব সম্প্রতি সারা বিশ্বের করোনা আক্রান্ত মানুষের পরিসংখ্যান গণনার এবং উপসর্গগুলো লক্ষ্য করেই এই মহামারির টিকা আবিষ্কার করলেন সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানী মহল।
এই ডাটাবেস গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা অনেক কম সময়ে কোনো রোগের কারণ এবং তার সম্ভাব্য চিকিৎসা বের করে ফেলতে পারছেন।
৭. ব্যয় এবং পরিশ্রম:-
কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহারের ফলে তথ্য নথিভুক্ত করা কম ব্যয় এবং পরিশ্রম সাপেক্ষ।
এছাড়াও, কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহার করে তথ্য নথিভুক্ত করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কম থাকে।
ডিজিটাল মাধ্যমে তথ্য নথিভুক্ত হওয়ার ফলে কর্মীরা যেকোনো জায়গা থেকে নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছেন।