উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত বিজ্ঞানী ডালটনের বিজ্ঞানভিত্তিক মতবাদকে গ্রহণ করা হতো, যেখানে পরমাণু বলতে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী, পদার্থের অবিভাজ্য ক্ষুদ্রতম কণাকে বোঝায়।
কিন্তু বিংশ শতাব্দী শুরু হবার আগেই দেখা যায়, এই মতবাদ অনুযায়ী বলা 'পরমাণু অবিভাজ্য' কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। পরমাণুকে ভাঙলে প্রায় 38টির মতো কণিকা পাওয়া যায়, যাদের আবার তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়-
১.স্থায়ী মূল কণিকাঃ ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন- যা সকল মৌলের পরমাণুতেই থাকে।
২. অস্থায়ী মূল কণিকা ঃ কতগুলো মূল কণিকা আছে যা কোন কোন মৌলের পরমাণুতে খুব অল্প সময়ের জন্য অস্থায়ীভাবে থাকে। এদেরকে অস্থায়ী মূল কণিকা বলে। উদাহরণ- পজিট্রন, মেসন, নিউট্রিনো, অ্যান্টিনিউট্রিনো ইত্যাদি।
৩. কম্পোজিট কণা ঃ স্থায়ী ও অস্থায়ী কণিকা ব্যতীত আরেকধরনের ভারী কণিকা দেখা যায়। এদেরকেই কম্পোজিট কণিকা বলা হয়। উদাহরণ- আলফা কণা, বিটা কণা ইত্যাদি।
নিউট্রিনো এবং অ্যান্টিনিউট্রিনো - দুটিই হচ্ছে পরমাণুর দুটি অস্থায়ী কণিকা। নিউট্রিনোর সাথে ইলেক্ট্রনের অনেক মিল রয়েছে, তবে নিউট্রিনো চার্জহীন এবং এর ভর ইলেক্ট্রন থেকেও কম, প্রায় শূন্য। নিউট্রিনোর প্রতিপদার্থ বা অ্যান্টিম্যাটার হচ্ছে অ্যান্টিনিউট্রিনো। এটিরও ভর ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক চার্জ শূন্য। তবে এটির ভিন্ন ধরণের চার্জ আছে, যার নাম লেপটন সংখ্যা।
নিউট্রিনো মহাবিশ্বের অন্যতম সহজলভ্য কণিকা হলেও এটি পৃথক করা অনেক জটিল। সকল মূল কণিকার মধ্যে এটি কম ক্ষতিকর, কেননা প্রতিদিন সূর্যের আলোর সাথে প্রচুর নিউট্রিনো আমাদের দেহের সংস্পর্শে আসে। কিন্তু এতে কোনো ক্ষতি হয় না!