আমার চারপাশে অসংখ্য সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে পাঁচটি সংঘর্ষের ঘটনা নিম্নরূপঃ
১ম ঘটনাঃ গত সোমবার, ৪র্থ অক্টোবর, ২০২১ তারিখে ঢাকার রামানুজন হাই স্কুলের সামনে রাস্তা পার হতে গিয়ে তৃতীয় শ্রেণির মুনতাহা আক্তার একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় অজ্ঞান হয়ে যায়। তার পা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের ধারণা সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। [তথ্য সূত্র- দৈনিক বাংলা পত্রিকা]
২য় ঘটনাঃ গত মঙ্গলবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২১ তারিখে সিলেটের ভেড়ামাড়ায় একজন রিক্সাচালক বেখেয়ালীভাবে মাঝপথে হঠাৎ ব্রেক করায় পেছনে থাকা সিএনজি চালক বুঝতে না পেরে রিক্সাটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে রিক্সায় অবস্থানরত যাত্রী রিক্সা থেকে ছিটকে পড়ে যান এবং মাথা থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পর এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। [তথ্য সূত্র- বংলাদেশ প্রতিদিন]
৩য় ঘটনাঃ গত বুধবার, ৬ই অক্টোবর, ২০২১ তারিখে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের সামনের রাস্তায় দুই সাইকেল আরোহীকে একটি বাস ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। তাঁরা তৎক্ষণাৎ মৃত্যুবরণ করেন। পুলিশ পলাতক বাসটিকে আটক করেছেন। [তথ্য সূত্র- দৈনিক সমকাল]
৪র্থ ঘটনাঃ গত বৃহস্পতিবার, ৭ই অক্টোবর, ২০২১ তারিখে চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে রাত ৯টার দিকে রাতের শেষ সোনারগাঁ গামী যাত্রাবাহী বাস অগ্রসর হচ্ছিল। এমন সময় উল্টো দিক থেকে মালবাহী একটি ট্রাক অত্যন্ত দ্রুতগতিতে পার হতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বাস চালকসহ বাসের চারজন যাত্রী গুরুতর আহত। ট্রাকচালক বর্তমানে পলাতক তবে পুলিশ বাহিনী তাকে দ্রুতই খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছেন। [তথ্য সূত্র- প্রথম আলো]
৫ম ঘটনাঃ গত শুক্রবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২১ তারিখে ঢাকার নিউমার্কেটের নিকটেই একটি বাস একটি রিক্সাকে ওভারটেক করতে গিয়ে রিক্সাটির সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বাসটির কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও রিক্সাটি উল্টে পড়ে যাওয়ায় রিক্সাচালক এবং এর যাত্রী দুজনেই গুরুতর আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে তাঁরা নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। [তথ্য সূত্র- যুগান্তর]
উপরোক্ত ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩য় ঘটনাটি সবচেয়ে ভয়াবহ। কারণ-
উল্লিখিত ঘটনাগুলোতে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার মূল কারণ হলো ভরবেগ। ১ম, ২য় ও ৫ম ঘটনাগুলোতে ভরবেগের পরিমাণ কম। তাই সেগুলোতে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে কম। কিন্তু ২য় ও ৪র্থ ঘটনার ক্ষেত্রে ভরবেগের পরিমাণ বেশি। তাই ঘটনাগুলোতে ক্ষতিও হয়েছে বেশি। কিন্তু ৪র্থ ঘটনাটিতে ৩য় ঘটনার চেয়ে কম ক্ষতি হয়েছে। কারণ ৪র্থ ঘটনাটিতে বাস ও ট্রাক উভয় যানেরই ভর অনেক এবং এদের ভরবেগ প্রায় সমান ছিল। ভরবেগের সংরক্ষণশীলতার নীতি অনুযায়ী, দুইটি বস্তুর সংঘর্ষের পূর্বের ভরবেগ ও সংঘর্ষের পরের ভরবেগ সমান থাকে এবং বস্তু দুইটি সংঘর্ষের পর একে অপরের সাথে বেগ বিনিময় করে। তাই বাসের ভরবেগ ট্রাকের ভরবেগ থেকে সামান্য কম হওয়ায় সংঘর্ষের পর বাস বেগ বিনিময় নীতির কারণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু ৩য় ঘটনার ক্ষেত্রে সাইকেলের ভরবেগ বাসের তুলনায় নগণ্য। তাই বাসের সাথে সংঘর্ষ হওয়ায় সাইকেলটি বেগ বিনিময় বিধির কারণে ছিটকে পড়ে গিয়েছে, কিন্তু বাসের কিছুই হয়নি। তাই বলা যায় যে, ভরবেগের কারণে ৩য় ঘটনাটি সবচেয়ে ভয়াবহতার শিকার হয়েছে।