৯ম শেণির ৯ম সপ্তাহের পদার্থবিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। ( Class 9 8th week Physics assignment solution) - আস্ক পড়ুয়া
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
368 বার প্রদর্শিত
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (2.2k পয়েন্ট)
পূনঃতকমাযুক্ত করেছেন

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (2.2k পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন

 ২০ জুলাই, ২০২১

প্রধান শিক্ষক

রামানুজন হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ

সিলেট

বিষয়: পদার্থবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ যেভাবে ঘটেছে তার বিবরণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন।

সুত্র : রা. হা. স্কু. অ্যা. ক. / আদেশ নং-৫৩২ (১৬/০৪/২০২১)

মহোদয়,

আপনার আদেশে আদিষ্ট হয়ে বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত 'পদার্থবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ যেভাবে ঘটেছে' সংক্রান্ত প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য তুলে ধরা হলো।


আধুনিক সভ্যতা হচ্ছে বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞানের এই অগ্রগতি এক দিনে হয়নি, শত শত বছর থেকে অসংখ্য বিজ্ঞানী এবং গবেষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে একটু একটু করে আধুনিক বিজ্ঞান বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থ ও শক্তি নিয়ে আলােচনা করা হয় সেই শাখাকে পদার্থবিজ্ঞান বলা হয়। পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ ও বিশ্লেষণের আলােকে বস্তু ও শুক্তির রূপান্তর ও সম্পর্ক উদঘাটন এবং পরিমাণগতভাবে তা প্রকাশ করাই হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। পদার্থবিজ্ঞান যেহেতু বিজ্ঞানের প্রাচীনতম শাখা এবং সবচেয়ে মৌলিক শাখা,শুধু তাই নয় বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা কোনাে না কোনােভাবে এই শাখাকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর অনেক বড়। পদার্থবিজ্ঞান হচ্ছে বিজ্ঞানের একটি মৌলিক শাখা কেননা এর নীতিগুলােই বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাসমূহের ভিত্তি তৈরি করেছে।উদাহরণ স্বরূপ, শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞানের একটি মূল নীতি যা হচ্ছে পরমাণুর গঠন থেকে শুরু করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দান পর্যন্ত বিজ্ঞানের বিস্তৃত এলাকার মূল ভিত্তি। প্রকৌশলশাস্ত্র থেকে শুরু করে চিকিৎসা বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে শুরু করে সমুদ্রবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান থেকে শুরু করে মনােবিজ্ঞান সর্বত্র পদার্থবিজ্ঞানের পদ্ধতি ও যন্ত্রপাতির প্রভূত ব্যবহার রয়েছে। আধুনিক সভ্যতা বিজ্ঞানের ফসল। বিজ্ঞানের এই অগ্রগতির পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম, নানা আবিষ্কার ও উদ্ভাবন। বিজ্ঞানের কোনাে জাতীয় বা রাজনৈতিক সীমা নেই। বিজ্ঞানের উন্নতি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ সকল জাতির সকল মানুষের জন্য। প্রাচীনকাল থেকেই বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানের উন্নয়নে অবদান রেখে আসছেন।

পদার্থবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ

প্রাচীন বিজ্ঞানীদের মধ্যে সাধারণত খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮৬-৬২৪ এর গ্রিক বিজ্ঞানী থেলিসের নাম প্রথমে আসে। কারণ থেলিসের পূর্বে বিজ্ঞান খুব একটা যুক্তিনির্ভর ছিল না। সেমসয় বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার চেয়ে ধর্মীয়, অতীন্দ্রিয় ও পৌরাণিক ব্যাখ্যাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু বিজ্ঞানী থেলিস সর্বপ্রথম কার্যকরণ ও যুক্তি দ্বারা বিজ্ঞান বিশ্লেষণ শুরু করেন এবং সকল ধরনের অযৌক্তিক ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তিনি সূর্যগ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। এছাড়াও তিনি লোডস্টনের চৌম্বক ধর্ম সম্পর্কে জানতেন। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ৫২৭ এ আসেন বিখ্যাত গণিতবিদ পিথাগোরাস। জ্যামিতি ছাড়াও কম্পমান তারের ওপর তার মৌলিক কাজ ছিল। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬০ এ আসেন গ্রিক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস। তিনি পদার্থের অবিভাজ্য পরমাণু এটমের ধারণা দিয়েছিলেন। তাঁরই সমসাময়িক আরেকজন বিখ্যাত দার্শনিক ছিলেন এরিস্টটল। তিনি মাটি, পানি, বাতাস ও আগুন দিয়ে সবকিছু তৈরি হওয়ার মতবাদ দিয়েছিলেন। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ৩১০ এ আসেন আরিস্তারাকস। তিনি সর্বপ্রথম সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণা দিয়েছিলেন। তাঁর শিষ্য সেলেউকাস পরে তাঁর সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণাটি যুক্তিতর্ক দিয়ে প্রমাণ করেন। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ২৮৭ এ আসেন গ্রিক বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস। তিনি তরল পদার্থের ঊর্ধ্বমুখী বলের বিষয়টি আবিষ্কার করেন। এছাড়া তিনি গোলীয় আয়নায় সূর্যরশ্মিকে কেন্দ্রীভূত করে দূর থেকে শত্রুর যুদ্ধজাহাজে আগুন ধরিয়ে তিনি যুদ্ধে সহায়তা করেছিলেন। এরপর খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৬ এ আসেন গ্রিক বিজ্ঞানী ইরাতোস্থিনিস। তিনি তখনকার সময়ে সঠিকভাবে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বের করেছিলেন। এরপর প্রায় দেড় হাজার বছর জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা প্রায় বন্ধ হয়েছিল। শুধু ভারতীয়, মুসলিম এবং চীনা ধারার সভ্যতা গ্রিক এই জ্ঞানচর্চাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে আসেন ভারতবর্ষের আর্যভট্ট। পূর্বে শূণ্যের ধারণা গণিতে থাকলেও সংখ্যা হিসেবে শূণ্য আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি। তাই সর্বপ্রথম তিনিই সত্যিকার অর্থে সংখ্যা হিসেবে শূণ্যের ব্যবহার শুরু করেন। এরপর ৭৮৩ খ্রিষ্টাব্দের আল খোয়ারিজমির লেখা আল জাবির থেকে বর্তমান এলজেব্রা অর্থাৎ বীজগণিত এসেছে। এরপর ৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দের আল মাসুদি প্রকৃতির ইতিহাস নিয়ে ৩০ খণ্ডের একটি এনসাইক্লোপিডিয়া লিখেছিলেন। এরপর ৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ইবনে আল হাইয়াম আলোক বিজ্ঞান কিছু মৌলিক কাজ করেছিলেন। এরপর ১০৩১ খ্রিষ্টাব্দের চীনা বিজ্ঞানী শেন কুয়ো চুম্বক নিয়ে কাজ করেছিলেন এবং ভ্রমণের সময় কম্পাস ব্যবহার করে দিক নিরধারণের বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন। এরপর ১৫৪৩ খ্রিষ্টাব্দের কোপার্নিকাস তাঁর একটি বইয়ে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ব্যাখ্যা দেন। এরপর ১৫৬৫ সালে আসেন গ্যালিলিও। তিনি কোপারনিকাসের তত্ত্বটি সবার সামনে তুলে ধরেন এবং গাণিতিক সূত্র দেওয়ার পর পরীক্ষা করে সূত্র প্রমাণের বৈজ্ঞানিক ধারার সূচনা করেন। এজন্য তাঁকে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। এরপর ১৬৮৭ সালে আইজ্যাক নিউটন বলবিদ্যার ৩টি ও মহাকর্ষ বলের সূত্র এবং লিবনিজের সাথে ক্যাল্কুলাস আবিষ্কার করেন। আলোকবিজ্ঞান ও অন্য আরো বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। ১৭৭৮ সালে কুলম্ব বৈদ্যুতিক চার্জের ভেতরকার বলের সূত্র করেন। ১৭৯৮ সালে কাউন্ট রামফোর্ড দেখান যে তাপ এক ধরনের শক্তি এবং যান্ত্রিক শক্তিতে তাপশক্তিতে রূপান্তর করা যায়। ১৮০০ সালে ভোল্টা বৈদ্যুতিক ব্যাটারি আবিষ্কার করেছিলেন। ১৮২০ সালে অরস্টেড দেখান যে বিদ্যুৎপ্রবাহ দিয়ে চুম্বক তৈরি করা যায়। ১৮৩১ সালে ফ্যারাডে এবং হেনরি দেখান যে চৌম্বকক্ষেত্রের পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ তৈরি করা যায়। ১৮৫০ সালে লর্ড কেলভিন তাপ গতিবিজ্ঞানের (থার্মোডিনামিক্সের) দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিয়েছিলেন। ১৮৬৪ সালে ম্যাক্সওয়েল তাঁর সমীকরণ দিয়ে পরিবর্তন বিদ্যুৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রকে একই সূত্রের মাঝে নিয়ে এসে দেখান যে আলো বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ; অর্থাৎ বিদ্যুৎ ও চুম্বক একই। এরপর ১৮০৩ সালে ডাল্টন পারমাণবিক তত্ত্ব দেন। এরপর ১৮৮৭ সালে মাইকেলসন ও মোরলি দেখান যে প্রকৃতপক্ষে ইথার বলে কিছু নেই এবং আলোর বেগ স্থির কিংবা গতিশীল সকল মাধ্যমেই সমান। এরপর ১৮৯৫ সালে রন্টজেন এক্স-রে আবিষ্কার করেন। এরপর ১৮৯৬ সালে বেকেরেল দেখান যে পমাণুর কেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিকরণ হয়। এরপর ১৮৯৭ সালে থমসন পরমাণুর ভেতর ইলেক্ট্রন আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর ১৮৯৯ সালে পিয়ারে ও মেরি রোডিয়াম আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর ১৯০০ সালে ম্যাক্সওয়েল কোয়ান্টাম তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন। এরপর ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন তাঁর থিওরি অব রিলেটিভিটি প্রকাশ করেন যা থেকে সর্বকালের সবচেয়ে চমকপ্রদ সূত্র E=mc2 বের হয়ে আসে। এরপর ১৯১১ সালে রাদারফোর্ড দেখিয়েছিলেন যে পরমাণুর কেন্দ্রে খুবই ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াসে পজিটিভ চার্জগুলো থাকে। এরপর ১৯৩১ সালে ডিরাক প্রতি-পদার্থের অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিলেন। এরপর ১৯২৪ সালে হাবল দেখান যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। এরপর ২০১৩ সালে আবিষ্কৃত হয় হিগস বোজন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 861 বার প্রদর্শিত
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 456 বার প্রদর্শিত
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 330 বার প্রদর্শিত
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
0 টি উত্তর 228 বার প্রদর্শিত
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 488 বার প্রদর্শিত
"আস্ক পড়ুয়ায় স্বাগতম" আস্কপড়ুয়া একটি জ্ঞানমূলক ওয়েবসাইট।এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানের আলোকে ছড়িয়ে দেওয়া।এই কমিউনিটি তে যারা যুক্ত তারা জ্ঞানার্জনে উন্মুখ।যেকোনো বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানে পড়ুয়া বোর্ড সহযোগিতা প্রদানে তৎপর।

1.4k টি প্রশ্ন

1.7k টি উত্তর

1.4k টি মন্তব্য

3.7k জন সদস্য

...