এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম গল্পটির মূলভাব নিম্নে লেখা হলো:-
রচনাটি একটি ভাষণের লিখিত রূপ। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সােহরাওয়ার্দি উদ্যান) প্রায় দশ লক্ষ লােকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশ্যে এ ঐতিহাসিক ভাষনটি দেন। ১৮ মিনিটের এ ভাষণে তিনি বাঙালির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান । ১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়। যার ফলে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সৃষ্টি হয় এদেশে ১৯৭১ সালের পুর্ব পর্যন্ত ২৩ বছরের করুন ইতিহাস। ঐ ইতিহাস ছিল বাংলার মানুষের উপর অত্যাচারের ইতিহাস বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস, মুমুর্ষ নরনারীর আর্তনাদের ইতিহাস,এদেশের মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত হওয়ার ইতিহাস। ঐ ইতিহাস বাংলার জনগনকে অতিষ্ঠ করে তােলে এবং সর্বত্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলার সর্বস্তরেরন মানুষ। পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক শাসননীতি ও ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রকাঠামাে ভেঙ্গে সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে সেদিন বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এ উদ্দেশ্যে ১৯৬৬ সালে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে ৬ দফা কর্মসূচী ঘােষনা করে । ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন সূচীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৮ মিনিটের এক ঐতিহাসিক ভাষন দেন। এ ভাষনে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর প্রতিবাদী কণ্ঠের বজ্রধ্বনিতে পুর্ব বাংলার সর্বস্তরের মানুষের রক্ত স্বাধীনতার জন্য টগবগ করে ওঠে। এ ভাষন দেশবাসীর মনে জাগিয়েছিল শত্রুকে মােকাবিলা করার বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও অদম্য শক্তি। ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’- জয় বাংলা। সত্যিই এ বজ্র কণ্ঠস্বরের ওপরে ভিত্তি করেই রচিত হয়েছিল বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের। যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আজও মাথা উঁচু করে আছে আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশ।