উদ্ভিদের পুং বা পরাগরেণু ডিম্বকের গর্ভমুন্ডে পতিত হয়ে ভ্রুণ সৃষ্টি করার প্রক্রিয়াকে নিষেক বলে। আর নিষেক ঘটার জন্য পরাগায়ন আবশ্যক।
নিষেক যেকোন উন্নত বা উচ্চ শ্রেণীর জীবের বংশ বিস্তারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। যেহেতু জীব জগতের একমাত্র উদ্ভিদ গোষ্ঠী সুর্যালোকের সাহায্যে কার্বনডাই অক্সাইড পানি ও খনিজ লবন ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে এবং এই খাদ্য উদ্ভিদের নিজ ছাড়াও সমস্ত প্রাণীকুলে প্রবাহিত হয়ে খাদ্যের চাহিদা পূরন ও সৌর শক্তির প্রবাহ ঘটে।
জীব জগতের সকল প্রকার শক্তির উৎস হচ্ছে সূর্য। আমরা যে বেচে আছি এই শক্তি খাদ্য তথা উদ্ভিদ থেকেই আসে যা উদ্ভিদ সূর্য থেকে পায়। একারনে প্রাণীকুল বেচে থাকার জন্য শক্তি সংগ্রহ তথা খাদ্যের জন্য উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল। কাজেই এজন্য বেশি বেশি উদ্ভিদ প্রয়োজন। আর পৃথিবীতে উদ্ভিদ বৃদ্ধির জন্য উদ্ভিদের প্রজনন আবশ্যক। যেহেতু পরাগায়ন হচ্ছে প্রজননের একটি গুরুত্বপূর্ন পর্যায়। পরাগায়ন না ঘটলে, নিষেক ছাড়া ভ্রূণ তথা ফল ও বীজ সৃষ্টি হতে পারে না তাই উদ্ভিদ বংশ বিস্তার করতে না পেরে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ফলে মানুষ সহ সমস্ত প্রাণীকুল খাদ্যাভাবে বিলুপ্ত হবে। পরাগায়নের মাধ্যমে নিষেক ঘটে ফল ও বীজ সৃষ্টি হয় বলে প্রতাক্ষ ভাবে আমরা বা প্রাণীকুল খাদ্য পায়। এজন্য আমাদের বেচে থাকা পরাগয়নের উপর নির্ভর করে এবং পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের বংশ বিস্তার না ঘটলে উদ্ভিদ ধবংস হয়ে খাদ্য উৎপাদনের উৎপাদক সহ অক্সিজেন এর অভাবে প্রাণীকুল বিলুপ্ত হয়ে যাবে। প্রাণী কতৃক কার্বনডাই অক্সাইড এই উদ্ভিদই গ্রহন করে। ফলে উদ্ভিদের বংশ ধবংস হলে পরিবেশ ও বায়ুমন্ডলও দূষিত হয়ে পরবে । তাই পরিশেষে বলা যায় যে সমস্ত জীবজগত টিকিয়ে রাখতে উদ্ভিদের পরাগয়নের কোন বিকল্প নাই। প্রাণীকূল তথা জীবজগত টিকে আছে এই পরাগায়ন এর মাধ্যমে নিষেকের গুরুত্বের উপর।
তাই বলা যায় প্রকৃতিতে পরাগায়ন না ঘটলে মানুষসহ প্রাণীজগতের প্রায় সবকিছু বিলুপ্ত হয়ে যেত, টিকে থাকত শুধু অপুষ্পক জাতীয় উদ্ভিদ নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদ ও এদের উপর নির্ভরশীল অতি অল্প কিছু তৃনভোজী বা পাতা আহারী প্রাণী।