মানুষের মৃত্যুর পেছনে রয়েছে খুবই জটিল প্রক্রিয়া। সংক্ষেপে বলতে গেলে দেহের অত্যাবশ্যক কোষগুলোর মৃত্যু হলেই মানুষ মারা যায়। আর কোষের মৃত্যুর প্রধাণ কারণ অক্সিজেনের অভাব। কোনো কারণে শ্বাসপ্রশ্বাস বা হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলেই এই অভাব দেখা দেয়। অক্সিজেনের অভাবে ব্রেইন সেল সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্রেইন সেল মারা গেলে দেহের অন্যান্য অঙ্গের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আর তখনই আমরা কাউকে মৃত বলে ঘোষনা করি। অক্সিজেনের অভাব ছাড়াও ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন, বিষক্রিয়া, পানির অভাব, অতিটিক্ত ঠান্ডা ইত্যাদির কারণে কোষের মৃত্যু হতে পারে।
প্রতিদিন স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের দেহে লক্ষ লক্ষ কোষ মারা যায় আবার একই সাথে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে আমাদের দেহের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কাছে হার মানে। এর কারণ প্রতিবার নতুন কোষ সৃষ্টির সময় আমাদের DNA সূত্রকের প্রান্তে অবস্থিত টেলোমিয়ার ক্যাপ ক্ষয় হয়। এই ক্যাপ অনেকটা হাতে তৈরী দড়ির প্রান্তে দেয়া গিঁটার মতো, এটি না থাকলে পুরো DNA -ই ভেঙে যাবে।
এছাড়াও আমাদের হাত ও পায়ের পেশিকোষ নিজেরা নিজেদের প্রতিরুপ সৃষ্টি করতে পারেনা ফলে দেহের অন্যান্য স্থানের কোষ এদের ক্ষয় পুরন করে। এরকম আরও কিছু কারণে ধীরে ধীরে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দুর্বল হতে থাকে, সম্পূর্ণ এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় Aging. আর এটিই প্রাকৃতিক মৃত্যুর একমাত্র কারণ। অর্থাৎ একারণেই মানুষ মরণশীল।
উল্লেখযোগ্য যে, জীনগতভাবে একজন মানুষের জীবনকাল নির্দিষ্ট। জীবনযাপনের ধরন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাভেদে এই সময়সীমা বাড়তেও পারে কমতেও পারে, কিন্তু স্থায়ী হতে পারেনা।