১৬ই এপ্রিল, ২০২১
প্রধান শিক্ষক
শিমুলতলী উচ্চ বিদ্যালয়
কুমিল্লা
বিষয়: বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত 'বাংলা নববর্ষ বরণ' উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন।
সুত্র : শি. উ. বি./ আদেশ নং-৫৩২ (১৬/০৪/২০২১)
মহোদয়,
আপনার আদেশে আদিষ্ট হয়ে বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত 'বাংলা নববর্ষ বরণ' সংক্রান্ত প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য তুলে ধরা হলো।
গত ১৪ই এপ্রিল ছিল বাংলা নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে শিমুলতলী উচ্চ বিদ্যালয়েও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় বাঙলা নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষ্যে মাঠের একপ্রান্তে একটি স্টেজ তৈরি করা হয়েছিল। স্টেজটি বেলুন, কাগজের ফুল, রিবন ইত্যাদি দিয়ে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিল। এছাড়া মাঠের উপর শামিয়ানা টানিয়ে পুরো মাঠই সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। স্টেজ ও মাঠের এই সজ্জা সুধীবৃন্দের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল।
সকাল ৯ঘটিকায় প্রধান অথিতি রাশেদ খান মেনন বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উপস্থিত হলে ফিতা কাটা, পায়রা ও বেলুন উড়ানো, স্কাউটদের কুচকাওয়াজ প্রদর্শন এবং সর্বশেষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে তাঁকে সম্মান ও স্বাগত জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। এরপর তিনি আসনগ্রহণ করেন এবং সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্যের মাধ্য়মে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সকাল ১০টায় মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান পরিচালনায় অংশ নেয় স্কুলেরই প্রতিভাবান শিক্ষার্থীরা। তারা বাংলার ঐতিহ্যবহনকারী বিভিন্ন জিনিস যেমন- খাবার, খেলাধূলা, শোভাযাত্রা ইত্যাদি প্রদর্শন করে। খাবারের মধ্যে ছিল পান্তা-ইলিশ, বিভিন্ন মিষ্টান্ন, মোয়া-মুড়কি ইত্যাদি। খেলার মধ্যে ছিল মোরগ লড়াই, পায়রা ওড়ানো, বহুরূপী সাজ, সাপের খেলা ইত্যাদি। আর প্রদর্শিত শোভাযাত্রাটি ছোট হলেও অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল। সেখানে শিক্ষার্থীরা বিশালকায় চারুকর্ম পুতুল, হাতি, কুমির, লক্ষ্মীপেঁচা, ঘোড়াসহ বিচিত্র মুখোশ এবং সাজসজ্জ্বা, বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্য ইত্যাদি প্রদর্শন করে। এরপর শিক্ষার্থীরা একক ও দলীয়ভাবে নববর্ষের বিভিন্ন গান পরিবেশন করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ দর্শক ও অতিথিদের মাঝে বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন যেমন- বোঁদে, চনার গোঁজা, কাঁচা গোল্লা ইত্যাদি বিতরণ করেন। এরপর শুরু হয় ক্ষুদ্র পরিসরের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে গান, কবিতা আবৃত্তি, নাচ, যেমন খুশি তেমন সাজোসহ আরো কিছু প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষক এবং অতিথিবৃন্দ তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাঁরা প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্যে বাংলা নববর্ষ সম্পর্কে সুন্দর সুন্দর কথা বলেন এবং আমাদের নতুন বছর যেন ভালো কাটে তা প্রার্থনা করেন। তাঁদের বক্তৃতা শেষে একজন শিক্ষক এই অনুষ্ঠানের জন্য স্টেজ ও মাঠ সাজানো, পুরস্কার ও অন্যান্য জিনিস ক্রয় বাবদ মোট খরচের চার্টটি সবার সামনে তুলে ধরেন যা থেকে জানা যায় যে এই অনুষ্ঠান বাবদ স্কুল কর্তৃপক্ষের মোট ৩ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা মাত্র খরচ হয়েছে যা স্কুলের ফান্ড থেকে নেওয়া হয়েছে।
এরপর শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী পর্ব। এসময় প্রধান অতিথি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থীকে তাদের কৃতিত্বের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। সবশেষে সহকারি প্রধান শিক্ষক তার ছোট বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ইতি ঘোষণা করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণী তিনটি পর্বই ছিল অত্যন্ত সুবিন্যস্ত। এরপরও অভিভাবকদের আসন ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে অনেককে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা গেছে। এরপরও এবারের বাংলা নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান বিদ্যালয়ের গৌরব বৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে সক্ষম হয়েছে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
প্রতিবেদকের নাম : কাজল
প্রতিবেদকের ঠিকানা : নবম শ্রেণি, শিমুলতলী উচ্চ বিদ্যালয়
