নিউরন এবং নেফ্রন, দুটিই মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ দুটি তন্ত্রের গঠনগত ও কার্যকরী একক। এদের মধ্যে মিল-অমিল উভয়ই রয়েছে। তবে এদের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো -নেফ্রন রেচনতন্ত্রের মূল একক, অপরদিকে নিউরন বা স্নায়ুকোষ স্নায়ুতন্ত্র গঠনে মৌলিক ভূমিকা পালন করে।
নিউরন স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও কাজের একক। মানুষের মস্তিষ্কে প্রায় ১০০ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে। প্রতিটি নিউরন মূলত ডেনড্রন,অ্যাক্সন এবং কোষদেহ- এই তিনটির সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ রূপান্তরিত কোষ। একটি নিউরনের অ্যাক্সন এবং অপর নিউরনের ডেনড্রনের মধ্যে থাকা সূক্ষ্ণ সংযোগস্থলকে সিন্যাপ্স বলে। এই সিন্যাপ্সে্র মাধ্যমেই তড়িৎ রাসায়নিক পদ্ধতিতে স্নায়ু তাড়না পরিবাহিত হয়। মানবদেহের প্রতিটি নিউরন অন্য ৭ থেকে ১০ হাজার নিউরনের সাথে সিন্যাপ্স সংযোগ দ্বারা যুক্ত থাকে।
বৃক্কের ইউরিনিফেরাস নালিকার ক্ষরণকারী অংশ এবং কাজ করার একককে নেফ্রন বলে। মানবদেহের প্রতিটি বৃক্কে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ নেফ্রন থাকে। নেফ্রন মূলত একাধিক কোষ দিয়ে গঠিত রেচনতন্ত্রের একক, যার মূল কাজ হলো রক্ত থেকে রেচন পদার্থ ছেঁকে রক্তকে পরিশুদ্ধ করা এবং মূত্র তৈরি। নেফ্রন রেনাল করপাসল বা মালপিজিয়ান অঙ্গ এবং রেনাল টিউব্যুল- এই দুইটি অংশে বিভক্ত। রেনাল করপাসল ছাঁকনির মতন করে এবং রেনাল টিউব্যুল শোষণ ও নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় রেচনকাজ সম্পন্ন করে।
নিউরন
|
নেফ্রন
|
নিউরন স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যকরী একক
|
নেফ্রন রেচনতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যকরী একক
|
নিউরন মূলত একটি বিশেষ রূপান্তরিত কোষ
|
নেফ্রন একাধিক কোষের সমন্বয়ে গঠিত একক
|
নিউরন উদ্দীপনা বহন করে
|
নেফ্রন রক্ত পরিশোধন করে এবং মুত্র তৈরি করে
|
একটি নিউরন অন্যান্য নিউরনের সাথে সিন্যাপ্স সংযোগের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারে
|
একটি নেফ্রনের সাথে অন্যান্য নেফ্রনের যোগাযোগ সম্ভব নয়
|
নিউরন ডেনড্রন, অ্যাক্সন ও কোষদেহের সমন্বয়ে গঠিত
|
নেফ্রন রেনাল করপাসল ও রেনাল টিউব্যুলের সমন্বয়ে গঠিত
|
মানুষের মস্তিষ্কে প্রায় ১০০ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে
|
মানবদেহের প্রতিটি বৃক্কে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ নেফ্রন থাকে
|
নিউরন দেহের বর্জ্য নিষ্কাশনের সাথে সম্পর্কিত নয়
|
নেফ্রন দেহের বর্জ্য নিষ্কাশনের সাথে সম্পর্কিত
|
নিউরন স্নায়ুতাড়না ও উদ্দীপনার সাথে সম্পর্কিত
|
নেফ্রন স্নায়ুতাড়না ও উদ্দীপনার সাথে সম্পর্কিত নয়
|
নিউরন প্রধানত তিন প্রকার, যথা- সংবেদী স্নায়ু, মোটর স্নায়ু ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ু
|
নেফ্রন প্রধানত দুই প্রকার, যথা- কর্টিকাল নেফ্রন ও জাক্সট্রামেডুলারি নেফ্রন
|
নিউরনের অ্যাক্সনে মায়েলিন স্তর থাকে, যা তড়িৎসংকেত প্রেরণে সাহায্য করে
|
নেফ্রনে মায়েলিন স্তর থাকে না
|
সুতরাং, নিউরন ও নেফ্রন উভয়ই মানবদেহের দুটি গুরুত্বপূর্ণ তন্ত্রের একক হলেও এদের মধ্যে বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
তথ্যসূত্র- (https://www.google.com/amp/s/www.differencebetween.com/difference-between-nephron-and-vs-neuron/amp/)