মানবসৃষ্ট দুর্যোগ প্রতিরধ করলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দুর্যোগ দুই ধরনের।যথাঃ- মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মানুষের অসচেতনতা বা দূরদৃষ্টির অভাবে যে দুর্যোগ সৃষ্টি হয় এবং যা মানুষের প্রাণহানি ঘটানোর পাশাপাশি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে, পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করে এবং সমাজকে অস্থিতিশীল করে তোলে তাকে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ বলে। যেমন- বনভূমি বিনাশ, যুদ্ধবিগ্রহ, নদীর তীরের গাছপালা কেটে ফেলা ইত্যাদি। অন্যদিকে প্রাকৃতিক কোনো দুর্ঘটনা বা বিপর্যয় যখন কোনো জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে তোলে তখন তাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে। যেমন- বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভুমিকম্প, খরা, নদীভাঙ্গন, সুনামি, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি।
বর্তমানে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বন-জঙ্গলের গাছপালা কেটে বনভূমি বিনাশ করছে। এর ফলে যেই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সৃষ্টি হচ্ছে তাতে পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, সুনামি ইত্যাদির হার বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে, যার ফলে ঘন ঘন জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে। আবার নদীর তীরের গাছপালা কেটে ফেলায় নদীভাঙ্গনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মরুকরণের ফলে খরাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিশেষে বলা যায় যে, মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কারণেই বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগও বেশি বেশি হচ্ছে। মানুষ যদি এখনই সচেতন হয়ে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ প্রতিরোধ করে, তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগও কমে আসবে। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।