বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কোথা থেকে সংগৃহীত? - আস্ক পড়ুয়া
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1.1k বার প্রদর্শিত
"সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে করেছেন (404 পয়েন্ট)
বন্ধ
বন্ধ

2 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (202 পয়েন্ট)
নির্বাচিত
 
সর্বোত্তম উত্তর

আমার সোনার বাংলা গানটিরচিত হয়েছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে। গানটির পাণ্ডুলিপিপাওয়া যায়নি, তাই এর সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। সত্যেন রায়ের রচনা থেকে জানা যায়, ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতার টাউন হলে আয়োজিত একটি প্রতিবাদসভায় এই গানটি প্রথম গীত হয়েছিল। এই বছরই ৭ সেপ্টেম্বর (১৩১২ বঙ্গাব্দের ২২ভাদ্র) সঞ্জীবনী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের সাক্ষরে গানটি মুদ্রিত হয়। একই বছর বঙ্গদর্শন পত্রিকার আশ্বিন সংখ্যাতেও গানটি মুদ্রিত হয়েছিল। তবে ৭ অগস্ট উক্ত সভায় এই গানটি গীত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। বিশিষ্ট রবীন্দ্রজীবনীকারপ্রশান্তকুমার পালের মতে, আমার সোনার বাংলা ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ অগস্ট কলকাতার টাউনহলে অবস্থা ও ব্যবস্থা প্রবন্ধ পাঠের আসরে প্রথম গীত হয়েছিল।


 


আমার সোনার বাংলা গানটি রচিত হয়েছিল শিলাইদহের ডাক-পিয়ন গগন হরকরা (বাউল গগন চন্দ্র দাস) রচিত 'আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে' (ডাউনলোড লিঙ্ক নিচে) গানটির সুরের অনুষঙ্গে। সরলা দেবী চৌধুরানী ইতিপূর্বে ১৩০৭ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে তাঁর শতগান সংকলনে গগন হরকরা রচিত গানটির স্বরলিপি প্রকাশ করেছিলেন। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথের বঙ্গভঙ্গ-সমসাময়িক অনেক স্বদেশী গানের সুরই এই স্বরলিপি গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছিল। যদিও পূর্ব বঙ্গের বাউল ও ভাটিয়ালি সুরের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচিতি ইতিপূর্বেই হয়েছিল বলে জানা যায়। ১৮৮৯-১৯০১ সময়কালে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে জমিদারির কাজে ভ্রমণ ও বসবাসের সময় বাংলার লোকজ সুরের সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তা ঘটে। তারই অভিপ্রকাশ রবীন্দ্রনাথের স্বদেশী আন্দোলনের সমসাময়িক গানগুলি, বিশেষত আমার সোনার বাংলা। শিল্পী গোপালচন্দ্র সেনের কন্ঠে গানটি প্রথম রেকর্ড করা হয় (ডাউনলোড লিঙ্ক নিচে)।


 


যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয়সঙ্গীতঃ


১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১মার্চ গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ। পরে ৩ মার্চ তারিখে ঢাকাশহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভা থেকে ঘোষিত ইশতেহারে এইগানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে এই গান প্রথম জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার অজিত রায় গানটির বর্তমানে প্রচলিত যন্ত্রসুর করেন। ১৯৭২ সালের ১৩জানুয়ারী বাংলাদেশ সরকার গানটির প্রথম দশ লাইন জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন (মোট চরণ সংখ্যা পঁচিশটি) এবং যন্ত্রসঙ্গীতে ও সামরিক বাহিনীতে ব্যবহার করা হয় প্রথম চারটি লাইন। একই বছর বাংলাদেশের জাতীয়সংগীত হিসেবে ব্যবহার করা “আমার সোনার বাংলা” গানটির স্বরলিপি বিশ্বভারতী সংগীত বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত করা হয়।


 


২০০৬ সালে আইনজীবী কালিপদ মৃধা মোবাইলের রিং টোন এবং ওয়েলকাম টোন হিসেবে জাতীয় সংগীতের বাণিজ্যিক ব্যবহারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সংগীতকে মোবাইল ফোনে রিং টোন ও ওয়েলকাম টিউন হিসেবে এবং বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করাকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। আদালত গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংককে ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছিলো।


 


 


জনপ্রিয়তাঃ


স্রোতাদের পছন্দানুসারে বিবিসি বাংলার তৈরী সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় এই গানটি প্রথম স্থান দখল করে। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে অংশ নেয়া ২০৫ টি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের তুলনামূলক বিচারে দৈনিক গার্ডিয়ান পত্রিকার মতে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত দ্বিতীয় হয়। উরুগুয়ের জাতীয় সংগীত প্রথম হয়।


 


চলচ্চিত্রায়নঃ


চলচ্চিত্রকার শহীদ জহির রায়হান ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার বিখ্যাত 'জীবন থেকে নেওয়া' কাহিনীচিত্রে এই গানের প্রথম চলচ্চিত্রায়ন করেন।


 


*** একটা তথ্য হয়তো অনেকেই জানেন না। স্বাধীনতার পর,বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে বাণীসহ প্রতিদিন বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত জাতীয় সঙ্গীতের সুরে “আমার সোনার বাংলা” গাওয়া হতো। জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৬ সাল হতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে  বাণীসহ জাতীয় সংগীতের প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। এর কিছুকাল পরে বাংলাদেশ বেতারেও জাতীয় সঙ্গীত প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। জিয়াউর রহমানের পতনের আরও পর থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে জাতীয় সঙ্গীতের শুধু যন্ত্রসঙ্গীত বাজানো শুরু হয়।

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (404 পয়েন্ট)

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা কবিতার প্রথম দশ চরণ থেকে সংগৃহীত।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
2 টি উত্তর 264 বার প্রদর্শিত
1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
2 টি উত্তর 354 বার প্রদর্শিত
2 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
2 টি উত্তর 363 বার প্রদর্শিত
18 জুন 2020 জিজ্ঞাসা করেছেন Ask Porua (512 পয়েন্ট)
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 131 বার প্রদর্শিত
15 জুন 2023 "সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Nasim Reja (11 পয়েন্ট)
2 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 490 বার প্রদর্শিত
"আস্ক পড়ুয়ায় স্বাগতম" আস্কপড়ুয়া একটি জ্ঞানমূলক ওয়েবসাইট।এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানের আলোকে ছড়িয়ে দেওয়া।এই কমিউনিটি তে যারা যুক্ত তারা জ্ঞানার্জনে উন্মুখ।যেকোনো বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানে পড়ুয়া বোর্ড সহযোগিতা প্রদানে তৎপর।

1.4k টি প্রশ্ন

1.7k টি উত্তর

1.4k টি মন্তব্য

3.3k জন সদস্য

...