ভোলা দ্বীপ কীভাবে জনবসতি পূর্ণ হলো? - আস্ক পড়ুয়া
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
139 বার প্রদর্শিত
"সাধারণ জ্ঞান" বিভাগে করেছেন (94 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন (94 পয়েন্ট)

গাঙ্গেয় অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত দেশের একমাত্র দ্বীপ ভোলা । বর্তমান ভোলা একদা বৃহত্তর বরিশাল জেলার একটি মহকুমা ছিল। ১৮৫৪ সালে দ্বীপটি মহকুমায় উন্নীত হয়। ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলার মর্যাদা পায়। ভোলার আদি নাম ছিল দক্ষিণ শাহবাজপুর। চারদিকে নদী পরিবেষ্টিত এ জনপদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য আবহমান বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের মতোই। এলাকার কিংবদমত্মী, মসজিদ মন্দিরের স্থাপত্য ও নানা ঐতিহাসিক নিদর্শণ বিশে­ষণ করলে অনুমিত হয় এ জনপদ মাত্র ৭/৮ শত বছর আগে সভ্যতার আলোকপ্রাপ্ত হয়েছে। মহারাজা কন্দর্প নারায়ণের কণ্যা বিদ্যাসুন্দরী ও কমলা রাণীর দিঘির ইতিহাস এ অঞ্চলের লোক সংস্কৃতির একটি অংশ। এ দিঘির কাহিনী নিয়ে সুদুর তামিলনাড়ুর নিম্নাঞ্চলে এখনও গান পরিবেশিত হয়। মেঘনা, তেঁতুলিয়া বিধৌত বঙ্গোপসাগরের উপকুলে জেগে ওঠা প্রায় ৯০ মাইল দৈর্ঘ্য ও ২৫ মাইল প্রস্থ বিশিষ্ট এ ভূখন্ডের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো যেদিকে চোখ যায় সব দিকে শুধু সমতল ভূমি।  ফসলের দোলায়মান দিগমত্ম বিসত্মৃত মাঠ দেখে মানুষের মনে জেগে ওঠে বাউলের গান ও রাখালের বাঁশীতে ভর করে মোহনীয় সুর। প্রাকৃতিক সুষমামন্ডিত এ এলাকার গাছ গাছালী, পাখীর কুজন বারমাসী ফলমূল সত্যিই উলেস্নখযোগ্য।

 

হিমালয় থেকে নেমে আসা ৩টি প্রধান নদী পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র বাহিত পলি দিয়ে মোহনায় গড়ে উঠেছে এ দ্বীপ। সমুদ্র সমতল থেকে এর গড় উচ্চতা ১২ ফুটের মতো। নৃ-তত্ত্ব ও ভূ-তত্ত্ববিদরা মনে করেন ‘‘পূর্ব দিকে মেঘনা ও পশ্চিম দিকে তেঁতুলিয়া নদী বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এসে গতিবেগ হারিয়ে ফেলে। ফলে এ শামত্ম স্থানটিতে কালক্রমে পলি ও নদীতে বয়ে আসা বর্জ্য জমা হয়ে আজকের ভোলা নামক দ্বীপটির জন্ম।’’

 

ভোলার জন্ম খুব বেশি দিনের নয়। আনুমানিক ১২৩৫ সালের দিকে দ্বীপটি গড়ে ওঠতে শুরম্ন করে। এখানে প্রথম চর পড়া শুরম্ন হয় ১২৩৫ সালের দিকে এবং ১৩০০সালের দিকে চাষাবাদ শুরম্ন হয় বলে জে. সি. জ্যাক বাকেরগঞ্জ গেজেটিয়ারে উলেস্ন­খ করেন। এলাকার ধান, চাল, সুপারি, নারিকেল ও অন্যান্য প্রাচুর্যে প্রলুব্দ হয়ে একের পর এক বিদেশী শাসক ও পর্তুগীজ জলদস্যুরা এসেছে এখানে। ১৫০০ সালের দিকে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের নজর পড়ে এ দ্বীপটির ওপর। তারা দ্বীপটিকে ঘাঁটি বানিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বিঘ্নে লুটপাট চালিয়ে যেতে থাকে। এছাড়াও আরাকানের বর্গি ও মগরা দক্ষিণ শাহবাজপুরসহ আশেপাশের দ্বীপকে ঘাটি বানিয়ে লুটপাট চালিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি করে রাখত।১৭ সালে জন ডি সিলবেরা নামক জনৈক পর্তুগীজ জলদস্যু দ্বীপটি দখল করে। পর্তুগীজদের রেখে যাওয়া ভীম দর্শণ কিছু রোমশ কুকুর আজও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে সেসব লোমহর্ষক অত্যাচারের কাহীনি স্মরণ করিয়ে দেয়। বলা বাহুল্য মনপুরা ছিল এদের দস্যুবৃত্তির লীলাক্ষেত্র। 

১৮ শতকে দক্ষিণ শাহবাজপুরের আয়তন ছিল মাত্র ২৫২ বর্গমাইল। ১৮২২সাল পর্যমত্ম শাহবাজপুর ছিল বাকেরগঞ্জ জেলার অংশ। উনিশ শতকের প্রথমভাগে মেঘনার শাখা ইলিশা ও তেঁতুলিয়া বৃহত্তর আকার ধারণ করে। ফলে ভয়ংকর কালাবঁদর নদী পাড়ি দিয়ে নৌকা পথে জেলা সদর দফতরের সাথে দক্ষিণ শাহবাজপুরের যোগাযোগ রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই সরকার সিদ্বামত্ম নেয় বাকেরগঞ্জ হতে দক্ষিণ শাহবাজপুর ও হাতিয়াকে নোয়াখালীর অমর্ত্মভূক্ত করার। ১৮২২ সালের ২২ এপ্রিল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দক্ষিশাহবাজপুরকে নোয়াখালীর অমর্ত্মভূক্ত করার সুপারিশ করেন এবং ঐ বছর ৩ জুলাই নোয়াখালীর জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট এইচ, পারকার দক্ষিণ শাহবাজপুরের দায়িতব বুঝে নেন। ১৮৬৯ সাল পর্যমত্ম ভোলা নোয়াখালীর অধীনে ছিল।

 

ভোলা জেলার নামকরণের পেছনে স্থানীয়ভাবে একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। ভোলা শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নামক খালটি এখনকার  মতো অপ্রশসত্ম ছিলনা। একসময় এটি পরিচিত ছিল বেতুয়া নদী নামে। খেয়া নৌকার সাহায্যে নদীতে পারাপার চলতো। খুব বুড়ো এক মাঝি এখানে খেয়া নৌকার সাহায্যে লোকজন পারাপার করতো। তার নাম ছিল ভোলা গাজী পাটনী। আজকের যোগীরঘোলের কাছেই তার আসত্মানা ছিল। এই ভোলা গাজীর নামানুসারেই এক সময় স্থানটির নাম হয় ভোলা। ভোলার অন্যান্য উপজেলাও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে নামকরণ করা হয় যেমন দৌলতখাঁ, তজুমুদ্দি, বোরহানউদ্দিন ও লালমোহন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 274 বার প্রদর্শিত
1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 334 বার প্রদর্শিত
21 নভেম্বর 2020 "ক্যারিয়ার" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন alam Chowdhury (30 পয়েন্ট)
0 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
0 টি উত্তর 127 বার প্রদর্শিত
1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 183 বার প্রদর্শিত
17 জুলাই 2020 "অভিযোগ ও অনুরোধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sharmin Shanu (1.1k পয়েন্ট)
2 পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
1 উত্তর 285 বার প্রদর্শিত
12 জুলাই 2020 "অভিযোগ ও অনুরোধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Mahim (504 পয়েন্ট)
"আস্ক পড়ুয়ায় স্বাগতম" আস্কপড়ুয়া একটি জ্ঞানমূলক ওয়েবসাইট।এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানের আলোকে ছড়িয়ে দেওয়া।এই কমিউনিটি তে যারা যুক্ত তারা জ্ঞানার্জনে উন্মুখ।যেকোনো বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানে পড়ুয়া বোর্ড সহযোগিতা প্রদানে তৎপর।

1.4k টি প্রশ্ন

1.7k টি উত্তর

1.4k টি মন্তব্য

3.3k জন সদস্য

...